Skip to content

অনাগত সন্তানের মুখটাও দেখতে পারলেন না আনোয়ার | বাংলাদেশ

অনাগত সন্তানের মুখটাও দেখতে পারলেন না আনোয়ার | বাংলাদেশ

<![CDATA[

রাজধানীর গুলশানে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে সাততলা থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। তার মধ্যে একজন ছিলেন আনোয়ার হোসেন (৩০)। অন্যরা প্রাণে বেঁচে গেলেও শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

আনোয়ারের গ্রামের বাড়ি ভোলার দৌলতখানের দিদারুল্লা গ্রামে। পিতার নাম মো. নুর ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।

আর আনোয়ারের স্ত্রী আমেনা বেগম গ্রামে থাকেন। তিনি অন্তঃসত্ত্বা। অগ্নিকাণ্ডে স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে পাগলপ্রায় তিনি। অনাগত সন্তানের মুখটাও যে দেখে যেতে পারলেন না তার স্বামী।

আরও পড়ুন: বিপদের সময় মানুষ যেনো রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে না থাকে: মেয়র আতিক

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে আগুন লাগলে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আনোয়ার। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় আনোয়ারকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে জুলহাস গিয়ে রাত ২টার দিকে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করে।

আনোয়ারের ভাই জুলহাস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘টিভিতে আগুন লাগার খবর দেখে ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে জানতে পারি, আমার ভাই লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে আমি ও আমার বোন হাসপাতালে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে ভাইকে আর জীবিত পাইনি। ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘ভাই বিবিসির পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চির কাজ করতেন। বাসার বাজার করতেন। ভাবি আমেনা বেগম গ্রামে আছেন। তিনি অন্তঃসত্ত্বা। সন্তানের মুখও দেখে যেতে পারলেন না ভাই।’

এদিকে গুলশানের ওই ভবনটির ১২তলায় থাকতেন ফাহিম সিনহা ও তার স্ত্রী শামা রহমান সিনহা। স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও তাদের ১ ছেলে ও ২ মেয়ে এবং ফাহিমের মা নাগিনা আফজাল সিনহা থাকতেন।

আগুন লাগার পর শামা তার তিন সন্তান এবং শাশুড়িকে লিফটে করে নিচে নামিয়ে দেন। এরপর ওই লিফট আবার ১২ তলায় ওঠার পর তিনি নিজে আবার লিফটে করে নামার চেষ্টা করেন। এ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় সপ্তম তলায় গিয়ে তিনি আটকা পড়েন। তখন কৌশলে লিফট থেকে বের হয়ে সাততলার বেলকনির পাশে গিয়ে দাঁড়ান। সেখানে আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকলে সেখান থেকে ভবনের নিচে সুইমিংপুলে লাফিয়ে পড়েন।

বর্তমানে তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। সেখানে আরও চারজন চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। অন্যদিকে আগুনের ঘটনায় আনোয়ার হোসেন ছাড়াও আরেকজন মারা গেছেন। তবে এখনো নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: গুলশান অগ্নিকাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠন

রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫৯ মিনিটের দিকে গুলশান-২ নম্বরের ১০৪ নম্বর রোডের বহুতল ভবনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ক্রমান্বয়ে ইউনিট বাড়ানো হয়।

সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধারে যোগ দেন সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরাও। দীর্ঘ চার ঘণ্টা পর রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। আগুন লাগা ভবনের কয়েকটি ফ্লোর থেকে নারী শিশুসহ ২৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন ফায়ার ফাইটাররা।

]]>

সূত্র: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *