২০২০ সালে ইতালিতে লকডাউনের বদলতে স্বাভাবিকের তুলনায় ডিভোর্স বা বিয়েবিচ্ছেদ বেড়েছে ৬০ শতাংশ বেশি। এতে করে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়ছে দেশটির লাখ লাখ পরিবার।
২০২০ সালের মার্চ মাসে উহানের করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র ইতালিতে, বিশেষ করে উত্তর ইতালির সমৃদ্ধ শহরগুলোতে। ফলশ্রুতিতে ইতালিজুড়ে ঘোষণা করা হয় লকডাউন। আর লকডাউনে বন্দির সময় সমগ্র ইতালিয়ান জাতি গৃহবন্দি অবস্থায় পরিবারগুলোর মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন সৃষ্টি হওয়ার কথা থাকলেও পক্ষান্তরে হয়েছে উল্টো।
গত এক বছরে ইতালিজুড়ে বিয়েবিচ্ছেদ বেড়েছে ৬০ শতাংশ। দেশটির পারিবারিক আদালত একে জাতির জন্য আশঙ্কাজনক বলে মনে করেন। কারণ এমনিতেই ইতালিতে ইউরোপের মধ্যে জন্মহার অনেক কম। প্রতিবছর লোক সংখ্যা কমছে কয়েক হাজার করে। এর মধ্যে ডিভোর্স বা বিয়েবিচ্ছেদের জন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি কমে যাবে অতীতের চেয়ে আরও বেশি।
পারিবারিক আদালত ও আইনজীবীদের মাধ্যমে গবেষণা এবং তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, দেশটির অর্থনৈতিক মন্দা এর জন্য বেশি দায়ী। হতাশাগ্রস্ত পরিবারগুলো কলহের মাধ্যমে বিয়েবিচ্ছেদে জড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও ইতালিয়ানদের কর্মব্যস্ত জীবনে স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে একাধিক বন্ধুত্বের সম্পর্কে জড়িয়ে থাকে। লকডাউনের মধ্যে সেসব সম্পর্কে টানাপোড়ন দেখা দেওয়ায় বিয়েবিচ্ছেদ বেড়েছে বলে মনে করেন ইতালির জাতীয় বিয়েবিচ্ছেদ সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাতায়ো সানতিনি।
গত এক বছরে বিয়েবিচ্ছেদের কারণ ৪০ শতাংশ লকডাউন, ৩০ শতাংশ পারিবারিক কলহ ও বাকি ৩০ শতাংশ অন্যান্য কারণে। অনেকে আবার ২০১৫ সালের সহজ বিয়েবিচ্ছেদ আইনকে দুষছেন।
লকডাউনে ইতালিয়ান পরিবারগুলোর মধ্যে অশান্তি বৃদ্ধি ও শিশু জন্ম কমে গেলেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ছিল ভিন্ন। সব প্রবাসী ও বিশেষ করে বাংলাদেশি পরিবারগুলোর মধ্যে শিশু জন্মহার বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। পরিবারগুলো মিলেমিশে ভালো সময় কাটিয়েছে যা কর্মব্যস্ত সময়ে সম্ভব হয়ে উঠেনি। যদিও অনেক পরিবার অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে কিন্তু পারিবারিক মূল্যবোধ ও ভালোবাসা ছিল অটুট।