<![CDATA[
দেশে প্রথমবারের মতো ‘ইনসিটু’ বা স্ব-স্থান পদ্ধতিতে কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণে সফলতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট। এই পদ্ধতিতে কচ্ছপের ডিম থেকে শতভাগ বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। স্থানান্তর পদ্ধতিতে যেখানে বাচ্চা ফুটতে সময় লাগে ৬০ থেকে ৭০ দিন, সেখানে ’ইনসিটু’ পদ্ধতি সময় লেগেছে ৪৫ থেকে ৫০ দিন।
কক্সবাজারের উখিয়ার সোনারপাড়া সমুদ্রসৈকতে গত ২১ মার্চ ৩টি কচ্ছপ ডিম দিয়ে ফিরে যায় সাগরে। সেখান থেকে ২টি কচ্ছপের ডিম চুরি হলেও একটি কচ্ছপের ৯০টি ডিম সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট। গেলো ২১ মার্চ প্রথমবারের মতো এসব ডিম ‘ইনসিটু’ পদ্ধতিতে সংরক্ষণের দায়িত্ব পান স্থানীয় চিংড়ি পোনা আহরণকারী নবী হোসেন।
নবী হোসেন সময় সংবাদকে জানান, ২১ মার্চ রাতে ৩টি কচ্ছপ সোনারপাড়া সৈকতের বালুচরে এসে ডিম পেড়ে চলে যায় । কিন্তু সকালে দুটি কচ্ছপের ডিম পাওয়া যায়নি, তবে একটি কচ্ছপের ৯০টি ডিম পাওয়া যায়। যা পরবর্তীতে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের জানাই। তারা এসে ডিম সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়, তারপর ৪৫ দিনের মাথায় বালুচরের সংরক্ষিত বাসা থেকে প্রথম কচ্ছপের বাচ্চা বের হয়। ৪৬ দিনের মাথায় আরও ৪৫টি বাচ্চা বালুচরে বিচরণ করে।
এদিকে প্রতিদিনই কচ্ছপের বাসার প্যারামিটারের ডাটা সংগ্রহ করছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি নিরাপত্তা ও যত্নে সজাগ স্থানীয় বাসিন্দারাও।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ‘বর্জ্যদানব’
সোমবার (৮ মে) বিকেলে কচ্ছপের বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া ও তরিকুল ইসলাম, শিমুল ভূঁইয়াসহ বোরির অন্য বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, একদিন-দুদিন করে ৪৫ দিন পর ‘ইনসিটু’ পদ্ধতির গবেষণায় বালুচরের বাসা থেকে বেরিয়ে আসে কচ্ছপের বাচ্চা। একে একে জন্ম নেয় অসংখ্য কচ্ছপের বাচ্চা। আর বাচ্চাগুলো ছিল বেশ সুস্থ-সবল। যা সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে অবমুক্ত করা হলে তারা সাগরে যাত্রা করে। কচ্ছপ নিয়ে প্রথম গবেষণা কার্যক্রম সফল হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন:পৃথিবীর জনপ্রিয় ৭ সমুদ্র সৈকত পাবেন এক শহরেই!
নানা কারণে হুমকির মুখে সামুদ্রিক কচ্ছপ। তাই কচ্ছপ সংরক্ষণে জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, বঙ্গোপসাগরে কাছিমের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য বোরির বিজ্ঞানীরা চলতি বছর কচ্ছপ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। তারা দেশে প্রথমবারের মতো ইনসিটু পদ্ধতিতে সফলভাবে কচ্ছপের বাচ্চা ফুটিয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে। সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষার্থে মানুষকে সচেতন ও প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
]]>