<![CDATA[
ফার্মেসি দোকানদারদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছে খুলনা মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের সামনে সব ওষুধের দোকানও। এতে চিকিৎসা ও ওষুধ না পেয়ে ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজনেরা।
চিকিৎসার জন্য ওষুধ ও সরঞ্জাম সংকটে পড়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের ফার্মেসি মার্কেট। আর কর্মবিরতিতে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে সেবা প্রত্যাশী মানুষের দুর্ভোগ চরমে।
বিকেলে হাসপাতালের সামনে দাড়িয়ে দুর্ভোগের কথা জানালেন বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ থেকে আসা হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, আমি একজন স্ট্রোকের রোগী। মোড়লগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি। সোমবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ভর্তি হয়ে রাতে ওষুধপত্র কিনতে পারিনি। আমার সঙ্গে কোন লোকজন আসেনি। আমি একা এসেছি। আমি অসুস্থ মানুষ রোদে তাকাতে পারিনা। তারপরও এক চোখ চেপে ধরে সকালে পাশের এলাকা বয়রা মার্কেটে কষ্ট করে গিয়ে ওষুধ কিনা নিয়ে আসছি। হাসপাতালের সামনে ওষুধ না পাওয়ায় খুব অসুবিধা হচ্ছে।
মোল্লাহাট থেকে আসা আরেক রোগীর স্বজন আল-আমিন বলেন, আমার মেয়ের ডেলিভারি হবে। সোমবার রাতে হাসপাতালে ডাক্তার ছিলো না। শুধু নার্স ছিলো। তারা বলেছিলো রোগীর অবস্থা আশঙ্কজনক। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় পাঠাতে হবে। আমরা এমন কথা শুনে সারারাত ঘুমোতে পারিনি। তারপর ওষুধ আনতে বলেছে। ইজিবাইকে ২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দিয়ে সোনাডাঙ্গা এলাকায় গিয়ে ওষুধ জোগাড় করেছি। এখন আমার মেয়ের পরিস্থিতি কিছুটা ভালো।
আরও পড়ুন: খুলনা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ফার্মেসি বন্ধ
শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক না করায় কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বুধবার মামলা ও নতুন কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেন তারা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সাইফুল ইসলাম অন্তর জানান, হামলায় ১৩ ছাত্র আহত হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তারা সভা করে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন তারা। এছাড়া বুধবার সকালে ঘোষণা করা হবে নতুন কর্মসূচি।
অপরদিকে, ওষুধ ব্যবসায়ীরাও মার্কেটের সামনে অবস্থান করে দোকান বন্ধ রেখেছেন। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সহ-সভাপতি এস এম কবীর উদ্দিন বাবলু বলেন, হামলায় তাদের ৪-৫ জন আহত হয়। হামলাকারীরা আটক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে মেডিকেলের সামনের সব ওষুধের দোকান।
উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যায় মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী হাসপাতালের সামনের একটি ফার্মেসিতে ওষুধ আনতে যান। এসময় দাম নিয়ে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে হামলা ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ১০-১৫ শিক্ষার্থী আহত হন।
]]>