Skip to content

চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ | বাংলাদেশ

চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ | বাংলাদেশ

<![CDATA[

কুষ্টিয়ার খোকসা ও পাংশা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় চোর সন্দেহে ফজল শেখ (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে বেধড়ক পিটিয়ে সারা রাত কাচারিবাড়িতে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন গ্রামবাসী। গুরুতর আহত হলেও তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়নি। পরে ভোররাতে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে কুষ্টিয়ার খোকসা ও পাংশা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা গ্রামের কাচারিবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফজল শেখ খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের সেনগ্রামের মৃত চৌধুরী শেখের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভ্যান-সাইকেল মেরামতকারী ও দুই সন্তানের জনক।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে খোকসা থানা পুলিশ। পরে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

নিহতের স্ত্রী নার্গিস খাতুন ও স্বজনরা জানান, রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে কল পেয়ে ফজল বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর রাত ১টার দিকে বাড়িতে খবর আসে কাচারিবাড়ির খুঁটিতে বেঁধে গ্রামবাসী মারধর করছেন। খবর পেয়ে স্ত্রী নার্গিস খাতুন দ্রুত কাচারিবাড়িতে যান। গিয়ে দেখেন খুঁটিতে হাত-পা বাঁধা। তখন ফজল গুরুতর আহত অবস্থায় শুধু পানি পানি করছেন। গ্রামবাসী তাকে পানিও দেননি, চিকিৎসাও করাননি। তার স্ত্রী তাকে হাসপাতালে নিতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া হয়।

এরপর রাত ৩টার দিকে যখন ফজলের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে, তখন এলাকাবাসী চলে যান। ভোররাতে স্ত্রী পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ নিয়ে তার স্ত্রী সেনগ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।

স্বজনরা আরও জানান, প্রায় ১০ বছর আগে পাংশার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মেঘনা গ্রামের ইরি শেখের স্ত্রী ও আব্দুল কাদের মোল্লার ছোট মেয়ে ইতি খাতুনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ফজল। আগের পক্ষের সাত বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তারাই হয়তো ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।

আরও পড়ুন: গণপিটুনির ভয়ে ৯৯৯ নম্বরে সহায়তা চাইলেন চোর!

মেঘনা গ্রামবাসী জানান, সোমবার রাতে এলাকার সামছুলের বাড়িতে কয়েকজন চোর অটোগাড়ির ব্যাটারি চুরি করছিল। এ সময় ফজলকে হাতেনাতে ধরে কাচারিবাড়িতে বেঁধে রেখে গণপিটুনি দেয়া হয়। হয়তো ভয়ে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন।

নার্গিস খাতুন বলেন, ‘ওই এলাকার আবু বক্কর, হোসেন, ইরি, সামছুলরা আমার স্বামীকে খুব মেরেছে। ওরা বারবার বলছিল: মেরে ফেল, মেরে ফেল। আমার স্বামী মেকানিক, চোর নয়। পরিকল্পিত এ হত্যার বিচার চাই।’

মঙ্গলবার মেঘনা গ্রামে সরেজমিন দেখা যায় স্তব্ধ পরিবেশ। অভিযুক্ত আবু বক্কর, হোসেন, ইরি, সামছুল পলাতক।

কাচারিবাড়ির মোশারফের ছেলে বিপুল হোসেন বলেন, ‘রাতে সামছুলরা চোর ধরে কাচারিবাড়িতে বেঁধে রেখেছিল। রাতে খুব ঝড়-বৃষ্টির কারণে বাড়ি চলে গিয়েছে। আমি কোনো মারামারির ঘটনা দেখিনি। সকালে শুনলাম স্ট্রোক করে মারা গেছে চোর।’

খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার সকালে সেনগ্রামের নিজবাড়ি থেকে ফজলের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। চোর সন্দেহে এলাকাবাসী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। ঘটনা পাংশা থানায়। তাই মামলা সংক্রান্ত কার্যক্রম তারা করবেন। তবে ফজলের নামে থানায় কোনো চুরি বা অন্য মামলা নেই।

]]>

সূত্র: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *