<![CDATA[
একের পর এক দুর্ঘটনায় যেন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক! ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক এবং চিহ্নহীন স্পিডব্রেকার ছাড়াও খানাখন্দ এবং মাত্রাতিরিক্ত ত্রিহুইলার চলাচল এ মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এছাড়া খরচ কমাতে নতুন পদ্ধতিতে সড়কের ওপর পাথর বসিয়ে অতিরিক্ত বিটুমিনের ব্যবহারের কারণেও দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৭ জুন ভোরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নাজিরবাজার এলাকায় ট্রাক-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫ জন নির্মাণ শ্রমিক প্রাণ হারান। এ দুর্ঘটনা ছাড়াও সিলেট হাইওয়ে পুলিশের আওতায় থাকা ২১৫ কিলোমিটার মহাসড়কে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে ৭৮ জনের।
এ মহাসড়কে ১৬ বছর থেকে গাড়ি চালান আনুর আলী। তিনি সময় সংবাদকে জানান, অতীতের অধিকাংশ দুর্ঘটনা চালক ও পথচারীদের অসচেতনতায় হলেও বর্তমানে সড়কের ওপর অতিরিক্ত বিটুমিন এখন বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে চলছে সংস্কার কাজ। এতে সড়কের ওপর একবার বিটুমিন দিয়ে পরে পাথর দেয়া হয়। এরপর আবার বিটুমিন দেয়া হয়। ফলে রোদে বিটুমিন নরম হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫
বৃষ্টি হলে সড়কটি একদম টাইলসের মত পিচ্ছিল হয়ে যায়। যার কারণে ঠিকমতো ব্রেক কাজ করে না, ডানে-বামে গাড়ি সরে যায়। এছাড়াও আছে বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। তার ওপর সড়কটি খানাখন্দে ভরা। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে।
হাইওয়ে পুলিশ সিলেট জোনের তথ্য মতে, ২০২১ সালে মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে ১০২ জনের। ২০২২ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৩ জনে। দুর্ঘটনাপ্রবণ ৫৪টি স্থানকে ব্ল্যাকস্পস্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশতেই রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক।
এসব দুর্ঘটনার কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ। সেই সঙ্গে সড়কের অতিরিক্ত বিটুমিন অপসারণ ও সড়ক সংস্কারসহ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনায় এক দিনে ঝরল ২৩ প্রাণ
হাইওয়ে পুলিশের (সিলেট জোন) পুলিশ সুপার মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, ‘চালক ও পথচারীদের অসচেতনতা আছে। তাছাড়া সড়কে অনেক ত্রুটি আছে। পার্শ্বরাস্তার সড়ক সাইন না থাকা, স্পিডব্রেকারে চিহ্ন না থাকা ইত্যাদি কারণেও ঘটে দুর্ঘটনা। সড়কের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে আমাদের পক্ষ থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এদিকে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সিলেট বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ সড়কটি ছয় লেন হবে। তাই কিছুদিন পর এটি ভাঙা হবে। কিন্তু বর্তমানে সড়কটি যাতে চলাচলের অনুপযোগী না হয়, তার জন্য খরচ কম করা হচ্ছে। কিন্তু কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে সেটি দেখা হবে।
]]>