<![CDATA[
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার ডোরিনা ক্রসিংয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত শহিদ স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারের (২১ জুলাই) এই সভায় তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমসহ তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ স্মরণ উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় লাখ লাখ নেতাকর্মী সমর্থকদের ভিড়ে কার্যত শহর কলকাতা স্তব্ধ। দুদিন ধরেই রাজ্যটির ২৩ জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রাজধানী কলকাতামুখী তৃণমূলের সমর্থক স্থানীয় নেতা কর্মী এবং উৎসুক অনেক সাধারন মানুষও। ফলে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সকাল থেকে রেল, বাস এবং নৌপথে তৃণমূলের সমর্থক ছাড়াও নিত্যযাত্রীদের তেমন দেখা যাচ্ছে না। যদিও কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ নানা কৌশলে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার মরিয়া চেষ্টা করছে।
তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যে পরিস্থিতি তৈরি হবে সেটা আসলে কোনোভাবে কৌশল প্রয়োগ করে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তৃণমূলের দাবি, এই সমাবেশে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ সমবেত হবেন।
১৯৯৩ সালের আজকের দিনে তৎকালীন বামফ্রন্ট পরিচালিত রাজ্য সরকারের বেশ কিছু নীতির বিরুদ্ধে তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি মিছিলে পুলিশ প্রশাসনের হামলায় ১৩ যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তৎকালীন যুব-কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও।
আরও পড়ুন: বিজেপির এনডিএর বিরুদ্ধে লড়বে বিরোধীদের নতুন জোট ‘ইন্ডিয়া’
ওই দিনের নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং শহিদ পরিবারকে সম্মান জানাতে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের এই শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠান। ২০১১ সালে রাজ্যটিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস কার্যত তাদের বাৎসরিক রাজনৈতিক মহাসমাবেশ হিসেবেও দিনটিকে পালন করে থাকে।
শহিদ স্মরণ দিবস হলেও দিবসের পুরো কর্মসূচি ঘিরে থাকে রাজনৈতিক বক্তব্য এবং রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি কংগ্রেস বামফ্রন্ট এবং কেন্দ্রের শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিও মতো কর্মসূচি ঘোষণা করেন তৃণমূল নেত্রী।
এদিনের ২১ জুলাই সমাবেশ ত্রিশ বছর অতিক্রম করল। একই সঙ্গে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের এটাই শেষ ‘শহিদ স্মরণ’ কর্মসূচি। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মমতা কী রাজনৈতিক দিশা দেখান সেটা দেখতে হাজার হাজার দলীয় সমর্থক এখন ডোরিনা ক্রসিংয়ের সামনে তৃণমূলের শহিদ স্মরণ মঞ্চে উপস্থিত।
আজকের সমাবেশে তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে এদের নতুন রাজনৈতিক কর্মসূচিও ঘোষণা করতে পারেন মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি ব্যাঙ্গালোর বৈঠকে বিজেপিবিরোধী জোটের চূড়ান্ত মহড়ায় খুশি বিজেপিবিরোধী শিবির।
ভারতে বিজেপিবিরোধী অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে মনে করা হয় তৃণমূল কংগ্রেস তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সে কারণেই আজকের এই শহিদ স্মরণ আয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিজেপির বিরুদ্ধে আরও ধারালো রাজনৈতিক হুংকার তুলবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কর্মস্থলে যোগ দিয়েই ঘুষ গ্রহণ, হাতেনাতে আটক সরকারি কর্মকর্তা
এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্সি সিবিআই এবং ইডির কর্মকাণ্ড নিয়েও তৃণমূলের নানা রকম প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে, গত একবছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের এই দুটো এজেন্সি যেভাবে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক সরকারি আমলাদের গ্রেফতার করেছে সেটা মোটেও ভালোভাবে নেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার ইডিসিবিআইকে ব্যবহার করে এ ধরনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা গণতন্ত্র এবং সংবিধান পরিপন্থি।
এছাড়া রাজ্যজুড়ে বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ বন্ধ রাখার বিষয়টিও মমতা ভালভাবে নেননি। এর মাঝে রয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, রান্নার গ্যাসসহ জীবনযাপনের ব্যয় বাড়ার মতো ঘটনা। এর জন্য বরাবরই বিজেপি সরকারকে দায়ী করে আসছেন মমতা।
]]>