<![CDATA[
দীর্ঘদিন যোগাযোগবিচ্ছিন্ন থাকা বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছেন অশীতিপর হাজি আব্দুল মজিদ। এরই মধ্যে বন্ধুদের সন্ধানে একাধিক জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপনও দিয়েছেন। শেষ বয়সে দেশের মাটিতে পা রেখেই বন্ধুদের খুঁজছেন তিনি। যদিও সফল হননি এখনও।
৮০ বছর বয়সেও বন্ধুদের জন্য এমন ভালোবাসা দেখে অবাক তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী হাজি আব্দুল মজিদ বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা। যিনি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। চাকরির সুবাদে আশির দশকে লিবিয়া যান এবং সেখানে ১০ বছরের মতো কাটান। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তার বেশ কয়েক বাংলাদেশি বন্ধু হয়। নব্বইয়ের দশকে মজিদ অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমালে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সেসব বন্ধুর সঙ্গে। তিন দশক পর সেসব বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে চলতি বছরের জুনে বাংলাদেশে আসেন মজিদ। নানাভাবে অনুসন্ধান চালিয়েও বন্ধুদের খুঁজে না পেয়ে দিয়েছেন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন। এখনও কারো সন্ধান পাননি তিনি। তার চোখেমুখে একটাই আশা–বন্ধুদের দেখা পাওয়া।
আরও পড়ুন: সেই তো জীবনের পরম বন্ধু
হাজি মো. আবদুল মজিদ বলেন, ‘চাকরিজীবনের শুরুতে প্রথমে খুলনা, এরপর বরিশাল, তারপর আবার খুলনায় কাজ করি। সেখান থেকে লিবিয়ায় ৯-১০ বছর কাজ করি। সে সময় পাবনার হান্নান, আলাউদ্দিন, টাঙ্গাইলের রেহেনা, সূচরিতা, রাজশাহীর আব্বাস, নোয়াখালীর মনির, কুমিল্লার নুরুল ইসলামের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।’
তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের কথা আমার প্রায়ই মনে হয়, সে জন্য হন্য হয়ে খুঁজছি। এদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে আমি খুব সুখ অনুভব করতাম। তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারলে হয়তো আমার এ জীবনটা আরও ভালো কাটত।’
এই বয়সে এসে বন্ধুদের খোঁজ করার বিষয়টি আবেগতাড়িত করেছে মজিদের স্বজনদের। তারা বলেন, লিবিয়ায় থাকতে হওয়া বন্ধুদের খোঁজে এভাবে বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়াবেন, তা কল্পনা করা যায় না। বন্ধুদের প্রতি মানুষের এমন টান থাকে, তাকে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।
চলতি আগস্ট মাসেই অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যেতে হবে বৃদ্ধ মজিদকে। তবে তার আগে যদিও বন্ধুদের অবস্থানের খবরটুকুও পেতেন, তাহলে নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন বলে জানান মজিদ।
]]>