<![CDATA[
ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন তাহমিনা আক্তার রুনা। তিন বছর আগে সোনাগাজীর আবদুল হাই মনজুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। মায়ের কাছে চলে গেলেও এক সময় আবার মনজুর কাছে ফিরে আসেন তিনি। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ফেনী জেনারেল হাসপাতালে রুনার মরদেহ রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্বামী মজনুকে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে দেয়। স্বামী ফেনী মডেল থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে আর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে রুনার নিথর দেহ।
তাহমিন আক্তার রুনার মা নারগিস আক্তার জানান, চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই থানার আবু তোরাব এলাকায় তাদের বাড়ি। গত ১০ বছর আগে তার স্বামী ৬ সন্তান রেখে চলে যায়। স্বামীর বাড়ির পাশে সরকারি জায়গায় বসবার করে তারা। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তাহমিনা আক্তার দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঢাকার একটি ব্যাংকে কাজ নেয়। সেখানে থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোনে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মজনুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে তাদের বিয়ে হয়। পারিবারিকভাবে মিলমিশ হলে তারা গ্রামে বসবাস করে। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। যৌতুকের দাবিতে মজনু প্রায় তাকে মারধর করতো। গত ১৫ দিন আগেও মারধর করে। নিরুপায় হয়ে মারধর সহ্য করে মজনুর কাছে থাকে রুনা। বুধবার সকালে মজনু তার শাশুড়িকে ফোন করে জানায় রুনার ডায়রিয়া হয়েছ। তারা যেনো তাড়াতাড়ি ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আসে। হাসপাতালে এসে দেখেন তার মেয়ে রুনা মৃত।
আরও পড়ুন: প্রেমের বিয়ে মেনে না নেয়ায় কিশোরের আত্মহত্যা
তিনি আরও জানান, আমার মেয়ের স্বামী আমার মেয়েকে মেরে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় সোনাগাজী থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে হত্যা না আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা রুজু করবে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আসিফ ইকবাল জানান, সোনাগাজীর একটি মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিত ময়নাতদন্ত করা হবে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন জানান, মেয়ের মা থানার অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আমরা মামলা নিব। প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: প্রেমের বিয়ে মেনে না নেয়ায় একসঙ্গে নবদম্পতির আত্মহত্যা
তাহমিনার স্বামী আবদুল হাই মনজু জানান, আমার স্ত্রী ঘরে থাকা কীটনাশক খেয়েছে। প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওয়াশ করার পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করায় এক লোক আমাকে আটকানোর চেষ্টা করে। আমি ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সবাই মিলে আটক করে। আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।
]]>