Skip to content

ফের তৎপর ১৪ কংগ্রেসম্যান, বাংলাদেশের নির্বাচনে চান শান্তিরক্ষী বাহিনী | বাংলাদেশ

ফের তৎপর ১৪ কংগ্রেসম্যান, বাংলাদেশের নির্বাচনে চান শান্তিরক্ষী বাহিনী | বাংলাদেশ

<![CDATA[

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একের পর এক উসকানিমূলক বক্তব্য ও হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছেন গুটিকয়েক মার্কিন কংগ্রেসম্যান। নির্বাচনে সর্বশেষ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন চেয়েছেন ১৪ কংগ্রেসম্যান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষমতায় যেতে মরিয়া বিরোধীদের প্রপাগাণ্ডায় সায় দিয়ে মিথ্যাচার করছেন মার্কিন এই কংগ্রেসম্যানরা।

এদিকে সিলেটে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি মহল সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করছে।

 

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরব বিদেশি কূতনীতিকরা। সেইসঙ্গে সরব হয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের অনেকেই। বাংলাদেশকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরে একের পর চিঠি দিয়ে আসছেন বিরোধী দল ঘেঁষা এই কংগ্রেমসম্যানরা।

 

এবার জাতিসংঘের কাছে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছে ১৪ কংগ্রেসম্যান। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ডকে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান বব গুড, স্কট পেরি, আনা পলিনা-লুনা, জোশ ব্রেচেনসহ মোট ১৪ কংগ্রেস সদস্য। এমনকি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বাংলাদেশের সদস্যপদ স্থগিত করারও আহ্বান জানান তারা।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতায় সরব বিএনপি ও বব গুড

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কংগ্রেস সদস্যদের এ ধরনের চিঠি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এছাড়াও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানালেন জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশকে না নিতেই একটি পক্ষ বিদেশিদের কাছে তদবির করছে।

তিনি বলেন, একদল তদবির করছে আমাদের দেশের লোকদের যাতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেয়া হয়। তাদের প্রতি লজ্জা আর লজ্জা। তোমরা সরকারকে অপছন্দ করতে কিন্তু দেশের সঙ্গে তোমাদের এত শত্রুতা কেন? দেশের ভালো অবস্থানকে ধ্বংস করার জন্য এত মাতব্বরি কেন?

এর আগেও বাংলাদেশ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ এবং বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সর্বোত্তম সুযোগ করে দিতে জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গেল ২৫ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠি পাঠান কংগ্রেসের ৬ সদস্য।

যদিও ওই চিঠির তথ্যে অতিরঞ্জন, অসঙ্গতি ও ফাঁক আছে বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

 

১৪ কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে যা রয়েছে

 

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন ও তত্ত্বাবধানে’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও জাতিসংঘকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। চিঠিটি শুরু করা হয়েছে এমন বক্তব্য দিয়ে যে ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক নাগরিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্যাতন, এমনকি হত্যার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করতে আপনাকে এই চিঠি লিখছি’।

 

২০২১ সালে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করার পাশাপাশি র‌্যাব এখনও নির্যাতন, হত্যা ও গুম করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আরও দাবি করা হয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে গত ছয় থেকে আট মাস ধরে বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বিক্ষোভ করেছে। কিন্তু এসব বিক্ষোভে পুলিশ ও সরকার সমর্থকরা সহিংসতা করেছে।

 

আরও পড়ুন: ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠি প্রত্যাহারের দাবি ১৯২ মার্কিন বাংলাদেশির

 

বাংলাদেশে নির্বাচনে কারচুপি, সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ইতিহাস রয়েছে দাবি করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আগামী নির্বাচন যে অবাধ ও স্বচ্ছ হবে, সে ব্যাপারে আমরা সন্দিহান।’ নেতিবাচক ও ভিত্তিহীন এসব অভিযোগের পর জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ অবিলম্বে স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে র‍্যাবের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্ত শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত এর কোনো সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ ও মোতায়েন বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

সবশেষে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিশ্বের ‘নিরপেক্ষ’ দেশগুলোর সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশে ‘সুষ্ঠু ও অবাধ’ নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করার কথাও বলা হয়েছে। চিঠিতে যে ১৪ জন কংগ্রেসম্যান সই করেছেন তারা হলেন- বব গুড, স্কট পেরি, আনা পলিনা-লুনা, জোশ ব্রেচেন, রাল্ফ নরম্যান, অ্যান্ড্রু ক্লাইড, এলি ক্রেন, কোরি মিলস, পল এ গোসার, ডগ লামালফা, রনি এল জ্যাকসন, র‍্যান্ডি ওয়েবার, ব্রায়ান বেবিন ও গ্লেন গ্রোথম্যান।

 

১৪ মার্কিন কংগ্রেসম্যানের এই চিঠিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকদের অনেকেই। তারা বলছেন, বিশ্বের ‘নিরপেক্ষ’ সরকারগুলোর সঙ্গে নিয়ে জাতিসংঘকে বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজন ও তদারকিতে অংশগ্রহণের আহ্বান স্পষ্টতই কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং একই সঙ্গে স্বৈরাচারী দৃষ্টিভঙ্গিও। কেননা এমনটা আর কোনো দেশের ক্ষেত্রেই দেখতে পাওয়া যায় না।

 

বিশ্লেষকদের মতে, কয়েক মাস আগে বিএনপির প্রপাগান্ডার সঙ্গে সুর মিলিয়ে শান্তিরক্ষীদের ‘খুনি’ বলে অভিহিত করেছিল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশিদের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান মূলত তারই প্রতিধ্বনি। এটা স্পষ্ট যে, নির্বাচনে অংশ না নিয়েই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে এটা বিএনপির আরেক তদবির প্রচেষ্টা।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বিশেষ সহকারী শাহ আলি ফরহাদ বব গুডের টুইটের জবাবে বলেছেন, `কংগ্রেসম্যান, আমি ভেবেছিলাম যে, বাংলাদেশ নিয়ে আপনার শেষ চিঠির বিষয়ে মূলধারার নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর আপনার উপলব্ধি হবে যে আপনি একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর দ্বারা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগে প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করেছে।’

 

‘কিন্তু দেখা যাচ্ছে একটি গোষ্ঠীর প্রচারিত বিভিন্ন বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে একটি পক্ষ নিচ্ছেন। এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে যুক্ত জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামপন্থি দলগুলোর সাথে সম্পর্কিত একটি শিবিরকে শক্তিশালী করছেন।’  

]]>

সূত্র: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *