<![CDATA[
একই সাগরে দুই নিয়ম। বাংলাদেশিরা ঘাটে ট্রলার নোঙর করে থাকলেও বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করেন ভারতীয়রা। যার কারণে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন নিরাপদ হচ্ছে না। উৎপাদন বৃদ্ধির সুফলও পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সমুদ্রে মাছ শিকারের ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। তাই পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার জেলেরা অলস বসে আছেন। কিন্তু একই সময়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরছেন পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা।
জেলেদের অভিযোগ, প্রতিবারই বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞার সুযোগে সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়ায় ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কর্মহীন বাংলাদেশি জেলেরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করলেও সমুদ্র থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছেন অন্যরা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একই সাগরে দুই নিয়ম চলতে পারে না। অন্য দেশের জেলেরা মাছ ধরায়, বঙ্গোপসাগর জালমুক্ত থাকছে না। সামুদ্রিক মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নির্ধারণের পরামর্শ তাদের।
আরও পড়ুন: মধ্যরাত থেকে সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) মেরিন ফিশারিজ একোয়াকালচারের বিভাগীয় চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, যেখানে ১৪ জুন ভারতীয় জেলেদের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়, সেখানে আমাদের জেলেদের ২৩ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
ওয়ার্ল্ড ফিসের মৎস্য গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মাছের ডিম ছাড়ার সময়টা পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে একটি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণার দরকার। আসলে আমাদের মাছগুলো এ সময় ডিম দেয় কি না?
রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বাবুল বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে একই সময় নিষেধাজ্ঞা নির্ধারণের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় জাল-ট্রলারসহ ৩০ জেলে আটক
এদিকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় নাকাল সাগর উপকূলের জেলেরা। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৪৭ দিনই নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ সময় বেকার থাকতে তাদের। যার কারণে ঋণের বোঝা পিছু ছাড়ছে না জেলেদের।
মা ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা থাকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভায়শ্রমে আর সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকে।
গত ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়; চলবে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত। এই সময়কালে সমুদ্রে মাছ শিকারি কোনো ধরনের নৌযান চলাচল করতে পারবে না।
]]>