<
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ‘শুধু ফারাক্কা বাঁধের জন্যই অন্তত ১০০ নদীর মৃত্যু হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে আমাদের নদীগুলোরও বড় ক্ষতি হয়েছে। বাঁধের একটি অংশ পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৫ সালে ভারতকে ৩১০-৪৫০ কিউসেক পানি অপসারণ করার অনুমতি দেয়, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভারত সব ধরনের আলোচনা এড়িয়ে পানি সরিয়ে নেয়া চালু রাখে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে সেটা হতো না, সে দীর্ঘ আলাপ।’
বাংলাদেশ নদীশূন্য হওয়ার পথে কি না–জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন ‘বাংলাদেশ নদীশূন্য হওয়ার পথে নয়; বরং বলতে গেলে বাংলাদেশ নদীশূন্যই। এখন যেসব নদী আছে বলে আমরা ধরে নিচ্ছি, সেসব খাল হয়ে গেছে। নদীর সংজ্ঞায় এসব কোনোটিই আর নদীর পর্যায়ে নেই। এমনকি নদী রক্ষা কমিশন নদী পুনরুদ্ধারের জন্য নদী খনন করে বেশির ভাগকে খালে পরিণত করেছে। ফলে নদী দখল হয়ে যাচ্ছে।’
শরীফ জামিল আরও বলেন, ‘নদী একটি জীবন্ত সত্তা। নদী তার নিজস্ব অবস্থান নিয়ে চলে। এতে যেকোনো হস্তক্ষেপই নদীর উজান-ভাটিতে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং নদীকেন্দ্রিক সম্পদে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমাদের দেশ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকার ভাটির দেশ। উজানের একতরফা বিভিন্ন প্রকল্পে নদীগুলো নাব্য হারিয়েছে। যে কারণে শুকনো মৌসুমে পানি থাকে না। আবার বর্ষা মৌসুমে বাঁধ খুলে দেয়ার পর আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। এটি মোটা দাগের সমস্যা। আরও সূক্ষ্ম অনেক সমস্যা আছে। মানুষ স্থানান্তরিত হয়। জীবিকা হারিয়ে যায়। নদীর সঙ্গে সম্পৃক্ত খালগুলো নষ্ট হয়ে যায়। অন্যান্য জলাশয় হারায়। বিল-হাওড়গুলো নষ্ট হয়ে যায়। মাছের প্রজনন নষ্ট হয়। এর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।’
অভিন্ন নদীর ওপর কিছু করতে হলে তা যৌথভাবে আলোচনার মাধ্যমে হওয়া প্রয়োজন বলে মত দেন তিনি।
পলিপ্রবাহ হ্রাস ও পানি প্রত্যাহারের কারণে যখন নদীগুলো আধমরা হয়ে যায়, তখন সেসব নদী গিলে খায় দখলদার ও শিল্পকারখানার বর্জ্য। মরে যাওয়া নদী ছাড়াও জীবিত নদীগুলোকে তিল তিল করে দখল করছে দখলদাররা।
আগামী পর্বে থাকছে দখল-বাণিজ্যের আদ্যোপান্ত।
]]>