<![CDATA[
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করেছেন শেখ জহির উদ্দিন তুন্নান। হেলিকপ্টারে করে বিয়ের আয়োজনকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মাঝে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। বর কনেকে বহনকরা হেলিকপ্টারটিকে এক নজর দেখার জন্যে স্থানীয় আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ভিড় করেন হাজারও উৎসুক দর্শক।
পেশায় বিএসসি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বর শেখ জহির উদ্দিন তুন্নান নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. রাফি উদ্দিন আহাম্মদের ছোট ছেলে। কনে একই এলাকার মরহুম হাবিবুর রহমানের একমাত্র কন্যা নিগার সুলতানা লিসা।
আরও পড়ুন: দাদার ইচ্ছা পূরণে হেলিকপ্টারে বউ আনলেন পাপ্পু
হেলিপ্টার থেকে নেমে বর তুন্নান জানান, ২০০৯ সালে তার বড় বোনের বিয়ে হয়েছিল হেলিকপ্টারে করে। সেই বোন আর ভাগ্নের ইচ্ছে অনুযায়ী হেলিপ্টারে করে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যাক মানুষের উপস্থিতি দেখে খুব খুশি তিনি। নতুন দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয় এ জন্য সবার কাছে দোয়া চান বর।
কনে নিগার সুলতানা বলেন, ‘আমার খুবই ভাল লাগছে। তার (স্বামী) ইচ্ছে ছিল হেলিকপ্টারে করে এসে বিয়ে করবে। তারও ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। আমারও ইচ্ছে ছিল হেলিকপ্টারে ওঠার, সেটিও পূরণ হয়েছে। সেজন্য খুব বেশি ভাল লাগছে। আমরা দুইজন যেন একসঙ্গে ভাল থাকতে পারি সেজন্য আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করেবেন।’
এদিকে এমন অয়োজনে খুশি পরিবারের অন্য সদস্যরাও। বরের বড়বোন মুক্তি আক্তার বলেন, ‘আমার বিয়েও হেলিকপ্টারে করে হয়েছিল। তখন আমাদের ইচ্ছে ছিল ভাইকেও হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করানোর। আমার একমাত্র ছেলেও চেয়েছিল হেলিকপ্টারে উঠার জন্য। সবার আজকে ইচ্ছেপূরণ হয়েছে। সেজন্য আমরা সবাই খুব খুশি।’
হেলিকপ্টার আর ঘোড়ার গাড়িতে করে ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন দেখে এলাকার সাধারন মানুষের মাঝেও যেন উৎসাহের কমতি ছিল না।স্থানীয় বাসিন্দা কমল চন্দ্র দাস জানান, নাসিরনগরে হেলিকপ্টারে করে বিয়ের অনুষ্ঠান কখনোই দেখেনি। এখন দেখে খুব ভাল লাগছে।
হেলিকপ্টার দেখার জন্য গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবার মধ্যে অন্যরকম উৎসাহ ছিল। সকাল থেকে মাঠে এসে দাঁড়িয়েছিল গ্রামবাসী। সোলেমান জানান, ’আমি কাছে থেকে সরাসরি কখনও হেলিকপ্টার দেখিনি। হেলিকপ্টার দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম আমরা। এখন দেখে আমার খুব ভাল লাগছে।’
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে বর এলো হেলিকপ্টারে
এদিকে প্রিয় সন্তানের ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনে খুশি বর-কনের অভিভাবকরা। বরের বাবা ডা. রাফি উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ’আমি আমার নাতি ও ছেলে-মেয়েকে খুব ভালবাসি। তাদের ইচ্ছে ছিল হেলিকপ্টারে করে বিয়েতে যাওয়ার। তাই এমন আয়োজন করা হয়েছে। এখন সবাই আমার ছেলে ও বউমার জন্যে দোয়া করবেন। তারা যেন সবসময় ভাল থাকতে পারে।’
বরের মা মেহেরুন্নেছা বলেন, ’আমার বড় মেয়ের ছেলে শুধু হেলিকপ্টার হেলিকপ্টার করে। আমার মেয়েকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে দেয়া হয়েছিল। তখন ইচ্ছে ছিল ছোট ছেলেকেও হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করানোর। সবাইকে নিয়ে আনন্দ করব একসঙ্গে সেই প্রত্যাশা থেকেই আজকের এমন আয়োজন করা হয়েছে।’
কনের মা নাসিমা খাতুন বলেন, ’আজকে আমার মেয়ের হেলিকপ্টারে করে বিয়ে হয়েছে। এতে আমাদেরও খুব ভাল লাগছে। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। তারা যেন সুখী হতে পার। এর আগে দুপুর ২টার দিকে হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসেন বর-কনেসহ নিকট স্বজনেরা। পরে তাদেরকে ঘোড়ার গাড়ি করে কনের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
]]>