<![CDATA[
দীপাবলি বা উৎসব মৌসুমের আগমুহূর্তে ব্যাপক চাহিদার বিপরীতে সীমিত সরবরাহের কারণে ভারতে গমের দাম বাড়ছে। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দেশটিতে গমের দাম বিগত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে উঠে গেছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় ডিলাররা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এবং দ্য ইকোনমিক টাইমস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
যে গতিতে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে নিত্যপণ্যটির দাম বাড়ছে, এতে হয়তো ভারত সরকার গমের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কেননা, আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে সরকার বাজারে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত ও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। গমের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে দেশটির খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়তে পারে, যা দেশটির সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তুলবে।
গমের দামের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে নয়াদিল্লিভিত্তিক একজন ব্যবসায়ী বলেন, যেসব রাজ্যে সাধারণত গম উৎপাদন হয়ে থাকে, সেখান থেকে শস্যটির সরবরাহ এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে ময়দার মিলগুলোও চাহিদা মোতাবেক বাজারে পর্যাপ্ত জোগান দিতে পারছে না।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে খাদ্যশস্য রফতানিতে রাশিয়ার রেকর্ড, শীর্ষ ক্রেতার তালিকায় বাংলাদেশ
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) মধ্যপ্রদেশের কেন্দ্রীয় রাজ্যের ইন্দোরে গমের দাম ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি মেট্রিক টন ২৫ হাজার ৪৪৬ রুপিতে (৩০৭ দশমিক ৩৩ ডলার) উঠে যায়, যা চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পর সর্বোচ্চ। গত চার মাসে দেশটির বাজারে গমের দাম প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
ভারতের ভোক্তাবিষয়ক দফতরের বরাতে এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগস্টে ভারতে খুচরায় প্রতি কেজি আটা গড়ে ৩৭ দশমিক ৪ রুপিতে বিক্রি হয়েছে।
কাজেই আসন্ন উৎসব মৌসুমে ঘাটতি এড়াতে সরকারি গুদাম থেকে খোলাবাজারে গম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মনে করেন গ্লোবাল ট্রেড হাউসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত মুম্বাইভিত্তিক এক ডিলার।
১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের গুদামগুলোতে গমের মজুত ছিল ২৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন।
ভারতীয় ডিলাররা বলছেন, স্থানীয় বাজারে গমের দাম কমাতে শস্যটি আমদানি করা জরুরি হয়ে উঠেছে। কেননা, আমদানি ছাড়া সরকার সরবরাহ বাড়াতে পারবে না।
আরও পড়ুন: চালের পর ভারতীয় চিনি রফতানিতেও নিষেধাজ্ঞা আসার শঙ্কা
এদিকে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সঞ্জিব চোপড়া বলেছিলেন, ভারত সরকার গমের ওপর আরোপিত ৪০ শতাংশ আমদানি কর কমানো বা বাতিল করার কথা ভাবছে। পাশাপাশি কী পরিমাণ গম ব্যবসায়ী ও মিলাররা মজুত রাখতে পারবেন, সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।
দেশটির কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে ভারতে রেকর্ড ১১২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন গম উৎপাদিত হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১০৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন। প্রসঙ্গত, ভারতে বছরে প্রায় ১০৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন গমের চাহিদা রয়েছে।
তবে চলতি বছরের জুনে একটি শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিল, ২০২৩ সালে ভারতের গমের ফলন দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমানের তুলনায় কমপক্ষে ১০ শতাংশ কম হয়েছে।
]]>