<![CDATA[
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিলের পানিতে ডুবে নীরব মোল্লা (১১) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর শোক সইতে না পেড়ে তিন তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে বড় বোন নাজা বেগম (১৮) আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (১২ জুন) বিকেল ৪টার দিকে শহরের চন্ডিবের মোল্লা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া দুইজন চন্ডিবের মোল্লা বাড়ির বাছির মোল্লার সন্তান। নীরব স্থানীয় ব্লু বার্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং নাজমা ওরফে নাজা স্থানীয় রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিকেলে নীরব মোল্লা বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির পাশে ফুটবল খেলতে যায়। খেলার এক পর্যায়ে নীরব মোল্লা পানি থেকে বল আনতে গিয়ে পা ফসকে বিলে পড়ে যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা তাকে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভাইয়ের মৃত্যুর কথা শুনে বোন নাজা বেগম বাড়িতে এসে দৌড়ে গিয়ে ছাদে উঠে লাফ দেন। আহত অবস্থায় ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার নেয়ার পথে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভূলতা এলাকায় যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে কারখানার আগুনে আরও একজনের মৃত্যু
এদিকে স্থানীয় সূত্র জানায়, নীরবকে মৃত ঘোষণা শোনার পর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রওশন আরা রিপা, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সেলিম মিয়াকে লাঞ্ছিত করেন। তার আগে প্রাইভেট ক্লিনিকের নার্স খাদিজা বেগম ও স্টাফ শাহজালালকেও লাঞ্ছিত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বলেন, পানিতে পড়া শিশুটিকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কী কারণে স্বজনরা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ভাংচুর ও দায়িত্বরত ২ চিকিৎসকসহ প্রাইভেট ক্লিনিকের স্টাফদের লাঞ্ছিত করেছেন তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। বিষয়টি দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মাদ্রাসাছাত্র নিহত
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাকছুদুল আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রক্ষিতে বড় বোন ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। শিশুটির মৃত্যুর ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বড় বোনের মরদেহ বাড়িতে আনার পর আরও একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে।
]]>