<![CDATA[
আশেক রাসুল লেবু মিয়া, ছিলেন সামান্য মাছ ব্যবসায়ী। সে জায়গা থেকে নিজের মেধা ও পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে হলেন দেশের একজন সফল ফলজ চারা উৎপাদনকারী। অভাবের সংসারে বাড়তি আয়ের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে মাত্র এক বিঘা জমিতে ২০০১ সালে গড়ে তোলেন ’এ আর মামুন নার্সারি’। দীর্ঘ ২১ বছরের শ্রমের ফসল হিসেবে বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন।
জাতীয় পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়ে আনন্দে আত্মহারা লেবু মিয়া বলেন, জীবনে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে। এই প্রাপ্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজের আর্থসামাজিক উন্নতির পাশাপাশি এলাকার বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির চেষ্টা করব। সেই সঙ্গে গাছ লাগানোর জন্য মানুষকে বেশি বেশি উৎসাহ দেব।
এদিকে নার্সারিতে সাফল্যের বিষয়ে লেবু মিয়া সময় সংবাদকে বলেন, মাছ ব্যবসায় জড়িত থাকা অবস্থায় কৃষি বিভাগের এক ভ্রাম্যমাণ দলের কাছে জানতে পারি, গাছের চারা বিক্রি করেও লাভবান হওয়া যায়। সে সময় সিদ্ধান্ত নিয়ে এক বিঘা জমিতে নিমের চারা লাগাই। এরপর পিছনে তাকাতে হয়নি। পরিবার ও প্রতিবেশীদের সহযোগিতা আজ ৫০ বিঘা জমিতে গড়ে উঠেছে নার্সারিটি। দেশি-বিদেশি আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, পোয়ারা, মালটা, কমলা, নারকেল, সুপারিসহ এক হাজার প্রজাপতির ফলের চারা রয়েছে এখানে।
লেবু মিয়ার ছেলে মামুন বলেন, আমরা প্রবাসীদের মাধ্যমে বিভিন্ন ফল গাছের সায়ন সংগ্রহ করে চারা তৈরি করি। সেই সঙ্গে পুরোপুরি ফলাফল সম্পর্কে সন্তুষ্ট হওয়ার পর বাজারজাত করি।
মামুন বলেন, নিম গাছের চারাই আমাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। আজ আমাদের চারা দেশের সব জায়গায় সরবরাহ হচ্ছে। তাছাড়া বিদেশ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির চারা সংগ্রহ করে সেখান থেকে সায়ন পদ্ধতিতে চারা বৃদ্ধি করছি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লেবু মিয়া বলেন, তিনি আমার শ্রমের মূল্যায়ন করেছেন। বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাওয়া আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া।
নীলফামারী শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কচুকাটা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের কচুকাটা হাইস্কুল মাঠ সংলগ্ন এলাকায় ‘এ আর মামুন নার্সারি’ অবস্থিত। নার্সারিতে বর্তমানে এক হাজার প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল-ফলের চারা রয়েছে।
]]>