Skip to content

মুখ দিয়ে ছবি এঁকে জীবন সংগ্রাম চলে আল-আমিনের | বাংলাদেশ

মুখ দিয়ে ছবি এঁকে জীবন সংগ্রাম চলে আল-আমিনের | বাংলাদেশ

<![CDATA[

দুই হাত, দুটি পা থাকলেও তা অচল আল-আমিন মিয়া (২৬)। তার পুরো শরীর প্যারালাইজড। তারপরও পরিবারের বোঝা না হয়ে আল-আমিন মুখ দিয়ে ছবি আঁকা শুরু করেন এবং মাউথ পেইন্টার হিসেবে বাংলাদেশে তিনজনের মধ্যে তিনিও একজন। তার ছবি ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। তার মুখ দিয়ে আঁকা ছবিতে প্রকৃতি,পরিবেশ এবং সমাজের অবহেলিত মানুষের প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে।

আল-আমিন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ০৭ নং লতিবপুর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামের আকমল ও রুপালি দম্পতির বড় ছেলে। তিনি দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য ঘুরছেন জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। বিভিন্ন সময়ে প্রতিবন্ধী ভাতার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিবন্ধী ভাতা জোটেনি তার ভাগ্যে।

জানা গেছে, আল-আমিনের প্যারালাইজড শরীর নিয়ে বারবার মিঠাপুকুর উপজেলার বিভিন্ন দফতরসহ জনপ্রতিনিদের কাছে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

আল-আমিনের জন্ম সনদসহ তার বাবা মায়ের ভোট মিঠাপুকুরে হলেও আল-আমিনের ভোটার আইডি কার্ড সাভারের। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি।

পরিবার সূত্র জানায়, আল-আমিন বলদিপুকুর শাহ আবুল কাসেম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০০৮ সালে তালগাছ থেকে পড়ে যান। এতে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। পুরো শরীর অবশ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: মেহেরপুরে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী প্রতিবন্ধী সাহাকুল

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে তার জানান। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে সাভার (সিআরপি) হাসপাতালে আল-আমিনের দীর্ঘ সাতাশ মাসের চিকিৎসায় সাতটি অপারেশনসহ তার একটি পা-কেটে বাদ দিতে হয়। অভাব-অনটনে পরিপূর্ণ চিকিৎসা করাতে না পারায় আল-আমিন বেঁচে গেলেও তার গলার নিচ থেকে পুরোপুরি অবশ এবং প্যারালাইজড হয়।

আল-আমিন ২০১৩ সালে এসএসসি এবং ২০১৫ সালে এইচএসসি পাস করে বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ (বিএসএস) অধ্যয়নরত। আল-আমিন মুখ দিয়ে ছবি আঁকেন। তিনি মাউথ পেইন্টার হিসেবে দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছেন। বাংলাদেশে তিনজনের মধ্যে তিনি একজন মাউথ পেইন্টার। ছবি এঁকে যা আয় হতো তা দিয়ে তার ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া এবং তার বাবা-মায়ের কষ্ট অনেকটা লাঘব হতো।

কিন্তু করোনা মহামারিতে তার ছবি বিক্রি বন্ধ হয়ে যায় এবং হতাশায় ভেঙে পড়েন তিনি। তার চিকিৎসা খরচ জোগাতে হিমশিম খাওয়ায় অবস্থা।

পরে সাভার সমাজ সেবা অধিদফতর গেলে তারা জানান, তার জন্মসনদ এবং তার বাবা-মায়ের আইডি অনুযায়ী মিঠাপুকুরে তার প্রতিবন্ধী ভাতা হবে। এরপর তিনি আগের মতো আবারও মিঠাপুকুরে সবার দ্বারে দ্বারে বিকল শরীর নিয়ে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন জানান।

আরও পড়ুন:এইচএসসিতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সময় পাবেন ২০ মিনিট

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা চেয়ারম্যান তার প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য সুপারিশ করলেও তা না হওয়ায় তিনি নির্বাক হয়ে যান। এমতাবস্থায় তার একটি প্রতিবন্ধী ভাতার জোর দাবি জানান আল-আমিন।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম জানান, তার মা, এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে। সম্ভবত তারা ঢাকার সাভারে থাকেন।

ইউপি-চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মণ্ডল জানান, তার বাবা-মা মিঠাপুকুরের ভোটার কিন্তু আল-আমিন সাভারে ভোটার হয়েছেন, সম্ভবত তাই সম্ভব হয়নি।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শরিফুল ইসলামকে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
 

]]>

সূত্র: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *