<![CDATA[
সুপেয় পানির জন্য ধুকছে রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। সারা বছর স্থানীয় ঝিরি বা ঝর্ণার পানির ওপর নির্ভর করে জীবনধারণ করতে হয় তাদের। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে মধ্য জুন পর্যন্ত পাহাড়ে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দেয়। এ বছর অধিক পরিমাণ ঝিরি ঝর্ণা শুকিয়ে যাওয়ায় তা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। আর প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
দুর্গম বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী গ্রাম। ছড়া থেকে পানি নিয়ে পাহাড় পাড়ি দিয়ে গ্রামে ফিরছেন বাসিন্দারা। এক কলসি পানির জন্য হাঁটতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এই পানি দিয়ে চলে পান করা থেকে ঘরের রান্না-বান্না ও ব্যবহারের কাজে। ফলে পানীয় ও ব্যবহার্য পানির তীব্র কষ্টে ভুগে এই গ্রামের মানুষ। এমন চিত্র শুধু বঙ্গলতলীরই নয়, জেলার লংগদু, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, জুরাছড়ির উপজেলারও বেশ কিছু গ্রামের। ছড়া শুকিয়ে যাওয়ায় তার তলদেশ গর্ত করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। বাটি কেটে কেটে এক কলসি পানি সংগ্রহ করতে সময় লাগছে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। কোথাও কোথাও সেসব কুয়াও শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে পানির জন্য মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। দুর্গম এসব অঞ্চলের মানুষের যেন কষ্টের শেষ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা সমীর চাকমা বলেন, জন্ম থেকেই এই পানির কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি। আমাদের সমস্যা সমাধানে কেউ কোন উদ্যোগ নেয় না। আমরা এই সমস্যার সমাধান চাই।
আরও পড়ুন: ১০ কোটি টাকার শোধনাগার অকেজো, সুপেয় পানির অভাবে নড়াইল পৌরবাসী
কাউখালীর বাসিন্দা বিথী রাণী চাকমা বলেন, পানির অভাবে আমরা ঠিকমত গোসল পর্যন্ত করতে পারি না। আমাদের খুব কষ্ট হয়। সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ আমাদের এম সমস্যার স্থায়ী সমাধান করুন।
আপতত প্রাকৃতিক উৎস থেকে সমস্যার সমাধান খুঁজছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। রাঙ্গামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী পরাগ বড়ুয়া বলেন, রাঙ্গামাটির বেশ কয়েকটি উপজেলার দুর্গম গ্রামগুলোতে পানির সমস্যা রয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে পাথরের কারণে নলকূপ স্থাপন করা যায় না। আগে বাসিন্দারা ঝিরি ঝর্ণা থেকে পানি পেতেন। বর্তমানে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আপতত প্রাকৃতিক উৎস থেকেই এই সমস্যার সমাধান খুঁজছি।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রম্ন চৌধুরী বলেন, পানির সমস্যা স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি পাশ হয়ে আসলে আমাদের পানির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, রাঙ্গামাটি জেলার ৩৭ ভাগ মানুষ সুপেয় পানির আওতার বাইরে রয়েছে।
]]>