<![CDATA[
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ভোগাচ্ছে পশ্চিমাদের। নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইউরোপে দেখা দিয়েছে জ্বালানি সংকট। পশ্চিমা দেশগুলোকে গ্যাস কিনতে হচ্ছে উচ্চমূল্যে।
ইউরোপে গ্যাসের দাম নিয়ে নরওয়ের ইকুইনোরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আন্দ্রেস ওপেদাল শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) এক কনফারেন্সে বলেন, ইউরোপের মূল সমস্যা হচ্ছে গ্যাস সংকট, যেটা সামনে আরও বাড়বে। এভাবে সংকট বাড়তে থাকলে ২০২৩ সালেও বেশি দামে গ্যাস কিনতে হবে ইউরোপকে। খবর রয়টার্স।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য যত বেশি গ্যাস উৎপাদন করা যায় সেসব নিয়ে। আমরা যদি নিজেদের চাহিদামাফিক গ্যাস উৎপন্ন করতে না পারি, তাহলে সমস্যা সামনে আরও বৃদ্ধি পাবে।’
জ্বালানির দাম বাড়ায় ইউরোপে বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৮টি দেশে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কে গিয়ে ঠেকেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বেহাল দশা যুক্তরাজ্যেরও। বিলের টাকা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। অনেক শহরে থেমে থেমে চলছে বিক্ষোভ। কিন্তু জনগণের অসন্তুষ্টি যতটাই বাড়ুক না কেন, এ সমস্যার আশু কোনো সমাধান নেই–এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ইউরোপ গ্যাস সংকটে ভুগলেও রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি গ্যাজপ্রম লাভের অঙ্কে ফুলেফেঁপে উঠেছে। সম্প্রতি কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের রেকর্ড পরিমাণ লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার সময় বাড়াল রাশিয়া
গ্যাজপ্রম জানিয়েছে, প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানিটি ৫১ দশমিক শূন্য ৩ রুবল পরিমাণ লভ্যাংশ দেবে। এটি মূলত চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের মুনাফার ওপর ভিত্তি করে দেয়া হচ্ছে।
গ্যাজপ্রমের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, চলতি সপ্তাহে কোম্পানিটি তার শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১ ট্রিলিয়ন রুবল (প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার) মূল্যমানের লভ্যাংশ দেবে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরপরই বড় রকমের ধাক্কা খায় গ্যাজপ্রম। ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ারবাজারে টিকে থাকতে রীতিমতো দক্ষযজ্ঞ করতে হয়েছে গ্যাজপ্রমকে। জুলাইতে গ্যাজপ্রম বলেছিল, তারা শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দেবে না।
কিন্তু দু-মাসের মাথায় চিত্র পাল্টে যায়। মুখ থুবড়ে পড়া গ্যাজপ্রম ইউরোপে নিজেদের নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন বন্ধ করে দিয়ে ও বেশি মূল্যে নিজ মুদ্রা রুবলে গ্যাস বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যেখানে অনেকেই ভেবেছিল নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার এ গ্যাস কোম্পানিটির টিকে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ, সেখানে গ্যাজপ্রমই এখন ইউরোপিয়ানদের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে।
]]>