<![CDATA[
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের এমজিএম হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন ষাট ও সত্তরের দশকে বলিউডের পরিচিত মুখ বেলা বসু। প্রয়াণকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
গত ২৫ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বলিউডের ‘লেডি ভিলেন’ খ্যাত এই অভিনেত্রী। ২০ ফেব্রুয়ারি মুম্বাইয়ের এমজিএম হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয় তার।
বেশিরভাগ ছবিতে খলনায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন প্রয়াত এ অভিনেত্রী। ছবিতে খলনায়িকার ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তিনি ‘লেডি ভিলেন’ পরিচিতি পেয়েছিলেন।
ষাট ও সত্তরের দশকে বলিউডের পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। নৃত্যশৈলীর জন্যও নামডাক ছিল তার। বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হেলেনের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বেলা বসু। ১৯৬৪ সালে চন্দ্র শেখর পরিচালিত বিখ্যাত ছবি ‘চা চা চা’-তে হেলেনের পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল বেলা বসু ও অরুণা ইরানিকে। ছবিতে হেলেনের দিদির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। ওই ছবিতে এক দৃশ্যে গান ছাড়াই নাচ করেছিলেন হেলেন, বেলা ও অরুণা। পরে এক সাক্ষাৎকারে বেলা জানিয়েছিলেন, কোনও মহড়া ছাড়াই সেই দৃশ্য শুট করেছিলেন তারা।
আরও পড়ুন: কবে আসছে ‘পাঠান ২’, জানালেন শাহরুখ
স্বাধীনতার আগে ১৯৪৩ সালে ১৮ এপ্রিল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বেলা বসু। তার বাবা একজন বস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন। ছোটবেলায় আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে সপরিবারে মুম্বাই পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গিয়ে এক পথ দুর্ঘটনায় বাবাকে হারান বেলা। তখন বেলার বয়স মাত্র ১২। বাবার মৃত্যুর পরে সংসারের হাল ধরেন বেলা ও তার মা। মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে নার্সের চাকরি নেন বেলার মা।
ছোটবেলা থেকে মণিপুরী নৃত্যশৈলীর প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল তার। এরপর বিভিন্ন ঘরানায় নাচে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন তিনি। অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি বেলা একজন দক্ষ চিত্রশিল্পী এবং জাতীয় পর্যায়ের সাঁতারুও ছিলেন।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে গ্রুপ ড্যান্সার হিসাবে পা রাখেন বেলা। বলিউডে সেই সূত্রেই হাতেখড়ি তার। নৃত্যে দক্ষতাই অভিনেত্রী হিসাবে তাকে ছবিতে কাজ করার সুযোগ এনে দেয়। পরিচালক নরেশ সেহগালের নজরে পড়েন তিনি। তার পরই ১৯৫৯ সালে ‘ম্যায় নেশে মে হুঁ’ ছবির হাত ধরে অভিষেক ঘটে বেলা বসুর। ছবিতে নিজের একক নৃত্যের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: তিন দশক পর একসঙ্গে পর্দায় ফিরছেন সালমান-আমির!
১৯৫৯ সালে ‘ম্যায় নেশে মে হুঁ’ ছবির হাত ধরে বলিউডে ডেব্যু হয় বেলা বসু। ছবিতে তার একক নৃত্যের দৃশ্য রয়েছে।
১৯৬৭ সালে ‘সিআইডি ৯০৯’ ছবিতে এক নৃত্যশিল্পী গোয়ন্দার চরিত্রে অভিনয় করেন বেলা বসু। ছবিতে মুমতাজের মতো অভিনেত্রীর পাশাপাশি নজর কেড়েছিলেন তিনি। এরপর ‘নাগিন অর সাপেরা’ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন বেলা।
এছাড়াও ‘জিন্দেগি অর মওত’, ‘রকি মেরা নাম’, ‘শিকার অর হাওয়া মহল’, ‘মে নেশে মে হুঁ’, ‘জিনে কি রাহ’, ‘জয় সন্তোষী মা’-র মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
১৯৫০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে ২০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেন বেলা বসু। অভিনেতা ও পরিচালক আশিস কুমারকে বিয়ে করেন বেলা। ২০১৩ সালে প্রয়াত হন আশিস কুমার। বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিনোদন জগতে।
]]>