Skip to content

সিটি নির্বাচন: রাজশাহী ও সিলেট প্রস্তুত, বাধ সাধতে পারে বৃষ্টি | বাংলাদেশ

সিটি নির্বাচন: রাজশাহী ও সিলেট প্রস্তুত, বাধ সাধতে পারে বৃষ্টি | বাংলাদেশ

<![CDATA[

সিটি নির্বাচনের শেষ ধাপে বুধবার (২১ জুন) রাজশাহী ও সিলেট সিটির ভোট হবে। তবে বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় এবং বরিশাল ও খুলনায় ভালো ফল করা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোট বর্জন করায় অনেকটাই নিরুত্তাপ এই দুই সিটির নির্বাচন। তবে ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলরদের লড়াইয়ে নির্বাচন কিছুটা জমবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে এই দুই সিটি নির্বাচনে বৃষ্টি বাগড়া দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

 

দুই সিটির নির্বাচনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের তথ্য পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। এছাড়া সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভোটের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করছে সংস্থাটি।

 

আর দুই সিটির নাগরিকরা চাইছেন ভোটের মাধ্যমে যিনিই নগরপিতা হবেন তিনি যেন জলাবদ্ধতা, যানজটসহ নানা নাগরিক সমস্যা সমাধানে কার্যকরী ব্যবস্থা নেন।  

 

সিলেট সিটি নির্বাচন
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।  কেন্দ্রের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে ১৭৪৭টি সিসি ক্যামেরা।

 

মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে নগরীর মেহেন্দিবাগে আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনসহ ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো হয়।

 

বুধবার ১৯০টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

 

রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের বলেন, পুরো সিটি করপোরেশন এলাকাকে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে। ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি শেষ হলেও বৃষ্টির কারণে সিলেটের ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কার কথা জানান তিনি।

 

আরও পড়ুন: কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১ হাজার ৭৪৭ সিসি ক্যামেরা 

 

তিনি জানান, সবকটি কেন্দ্রে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তায় কাজ করবে ১০ প্লাটুন বিজিবি। থাকবে র‌্যাব ও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স। প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার সদস্যের পাশাপাশি থাকবে পুলিশ। এ ছাড়াও ৪২টি ওয়ার্ডের জন্য ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট যেকোনও অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচারকাজ সম্পন্নের জন্য মাঠে রয়েছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া সব মিলিয়ে মোট সিসি ক্যামেরা থাকছে ১৭৪৭টি। এরমাধ্যমে ইসির প্রধান কার্যালয় থেকে নির্বাচন মনিটরিং করা হবে।

 

নির্বাচনী পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সিলেট নগরীর বিভিন্ন সড়ক। ছবি সময় সংবাদ 

 

এদিকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম ওরফে বাবুলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোট বর্জন করায় তাদের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে নেই।

 

মেয়র পদে আরও লড়ছেন জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম এবং স্বতন্ত্র মো. আবদুল হানিফ (কুটু), মো. ছালাহ উদ্দিন (রিমন), মো. শাহ্ জামান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

 

সিলেট সিটির মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০ এবং নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন। মেয়র পদে আট, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

 

রাজশাহী সিটি নির্বাচন 
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে রাজশাহী সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এক নাগাড়ে তা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে চেনা নগরীতে মেয়র পদে এবারের মতো নিরুত্তাপ ভোট দেখেননি পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা। অবশ্য ওয়ার্ডভিত্তিক একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় ভোট জমে উঠতে পারে বলে ধারণা নগরীর বাসিন্দাদের।

 

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রার্থী চারজন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)। তবে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী নির্বাচন বয়কট করেছেন।

 

খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইসলামী আন্দোলন না থাকায় অনেকটা নির্ভার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন।

 

এদিকে রাজশাহীর সিটি নির্বাচন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবারই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। সিটির প্রথম নির্বাচিত মেয়র বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু। ১৯৯৪ সালে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। টানা দুইবারের জয়ে তিনি ২০০৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

 

আরও পড়ুন: কাউন্সিলরদের নির্বাচনে জমবে ভোট

এদিকে বুধবারের ভোটে আওয়ামী লীগ জিতলে টানা দুইবার এবং সব মিলে তিনবার মেয়রের চেয়ারে বসবেন খায়রুজ্জামান লিটন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে লিটনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী বুলবুল। ২০১৮ সালে খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মোসাদ্দেক হেসেন বুলবুল ধানের শীষ প্রতীকে পান ৭৭ হাজার ৭০০ ভোট। ভোট পড়েছিল ৭৮. ৮৬ শতাংশ।

২০১৩ সালে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন তিনজন। ১৮ দলীয় জোটের সমর্থনে বিএনপির মহানগর যুবদলের আহবায়ক বুলবুল ৪৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারান আওয়ামী লীগের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান লিটনকে। ওইবার ভোট পড়েছিল ৭৬.০৯ শতাংশ।

আর ২০০৮ এ বিএনপির প্রার্থী বুলবুলের ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোটের বিপরীতে খায়রুজ্জামান লিটন ৯৮ হাজার ৩৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবারই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রার্থীর মধ্যেই ভোটযুদ্ধ হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কাউন্সিলর প্রার্থীর ওপর নির্ভর করতে হবে মেয়রদের ভোট। কারণ মেয়র নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হলেও কাউন্সিলর দলীয় পরিচয় হয় না। ফলে যেকোনো দলের যেকোনো নেতা এখানে নিজ উদ্যোগে দাঁড়াতে পারেন। আর যারা কাউন্সিলর পদে দাঁড়ায়, তাদের স্থানীয় যে ভোট ব্যাংক আছে তার ওপর ভিত্তি করেই দাঁড়ায়।

রাজশাহীতেও একই অবস্থা। এখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন, এমনকি আওয়ামী লীগের একাধিক কাউন্সিলর আছেন। তারা নিজস্ব ভোটার কেন্দ্রে নিয়ে আসতে চেষ্টা করবেন। আর যারা কাউন্সিলরকে ভোট দিতে আসবেন তারা মেয়রকেও ভোট দেবেন।

 

রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন সড়কে মেয়র ও কাউন্সিলরদের পোস্টার। ছবি: সময় সংবাদ

সিটি নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।  নির্বাচনে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আনসার এবং আর্মড পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।’

এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন বলেও জানান তিনি।

এবার ২৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১১ জন। একটি ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী।  ১৫৫টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। রাজশাহী নগরীতে ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এ ছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন ছয়জন। একজন হিজড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী।

 

ভোটে বাগড়া দিতে পারে বৃষ্টি
দুই সিটির নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিতে বাগড়া দিতে পারে বৃষ্টি। আবহাওয়া দফতর বলছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ হতে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

 

এ অবস্থায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

 

এদিকে সন্ধ্যায় দেয়া নদীবন্দরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে রাজশাহী ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

 

]]>

সূত্র: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *