<![CDATA[
আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যকার লড়াই একমাস পেরিয়েছে। এরই মধ্যে এই লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক শ মানুষ। সর্বশেষ দেশটির পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের এল গেনেইনা শহরে সেনাবাহিনী এবং আরএসফের লড়াইয়ে দুদিনে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৮০ জন। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১৬০ জন।
মিডলইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এল গেনেইনায় শুক্রবার (১২ মে) এবং শনিবারের (১৩ মে) লড়াইয়ে উভয় পক্ষের অন্তত ২৮০ জন নিহত হয়েছে।
বেসরকারি সংস্থা মেডিক্যাল সিন্ডিকেট এক বিবৃতিতে রোববার (১৪ মে) জানিয়েছে, ‘এল গেনেইনা শহরটি ২৩ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যদিও হতাহতের সংখ্যা গণনা করা খুবই কঠিন। তবে আমরা তারপরও গণনা চালিয়ে যাচ্ছি। শহরের চিকিৎসা সেবা এবং আইনশৃঙ্খলা বিভাগের বরাত দিয়ে আমরা জানতে পেরেছি, শহরে এখন পর্যন্ত ২৮০ জন নিহত এবং ১৬০ জন আহত হয়েছেন।’
আরও পড়ুন: সাত দিনের অস্ত্রবিরতিতেও সুদানে থামছে না সংঘর্ষ
মেডিক্যাল সিন্ডিকেট জানিয়েছে, র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের ইউনিফর্ম পরা লোকজন মোটরসাইকেল এবং অন্যান্য যানবাহনযোগে এসে শহরটিতে হামলা চালায়। ফলে আরএসএফ এবং স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর ফলে শহরে কয়েক শ মানুষের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে উভয়পক্ষের যোদ্ধারা ছাড়াও বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।
মেডিক্যাল সিন্ডিকেট আরও জানিয়েছে, শহরটিতে টানা তৃতীয়দিনের মতো রোববারও বন্দুকযুদ্ধ, বোমা হামলা চলেছে। এল গেনেইনা শহরের প্রতিবেশী শহরগুলোও এই লড়াই সংক্রমিত হয়েছে।
এদিকে, সুদানে সেনাবাহিনী ও আধা সামরিকবাহিনীর মধ্যে চলা সংঘাতে অন্তত সাড়ে চার লাখ শিশু ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, সুদানের সংঘাতে আনুমানিক ৮২ হাজার শিশু প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে গেছে। প্রায় ৩ লাখ ৬৮ হাজার শিশু অভ্যন্তরীণ-ভাবে বাস্তু-চ্যুত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুদানে সংঘাতে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক জানান, সুদানের নৃশংস সংঘাত দেশটির শিশুদেরকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ভয়ংকর সব ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন তারা। নিরাপত্তার সন্ধানে নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন বহু মানুষ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ১৪ হাজারের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। গোলাবর্ষণে ওষুধজাতীয় খাবারের চৌদ্দ হাজার পাঁচশো কার্টা নষ্ট হয়েছে। যেগুলো ছয় থেকে আট সপ্তাহের শিশুদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। এই সংঘর্ষ বহু শিশুর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১৫ এপ্রিল সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ চাদ, মিশর, ইথিওপিয়া, লিবিয়া এবং দক্ষিণ সুদানে আশ্রয় নিয়েছে। এই সহিংসতায় পাঁচশোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
]]>