<![CDATA[
সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দেশটির রাজনীতিতে ক্ষমতাধর সেনা কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব অস্বীকারের পর রক্ষা পেলেও সম্প্রতি সামরিক স্থাপনায় সমর্থকদের হামলার পর বিপাকে পড়েছেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
ব্রিটিশ সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে কার্যত ভেঙে দিয়েছে সেনাবাহিনী। পরিকল্পনা চলছে দলটিকে নিষিদ্ধ করে ইমরান খানকে রাজনীতি থেকেই সরিয়ে দিতে।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, বর্তমান শাহবাজ সরকারের টিকে থাকার পেছনে সেনা সমর্থন, দেশ পরিচালনায় প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে সরব ইমরান খান।
তাকে সামলাতে একের পর এক মামলা ও বেশ কয়েকবার গ্রেফতার চেষ্টার পরও ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিলেন পিটিআই চেয়ারম্যান। যার ফলে পাকিস্তান সরকার এবং দেশটির সেনাবাহিনীর একমাত্র টার্গেটে পরিণত হন ইমরান।
আরও পড়ুন: অপহরণের ২৪ ঘণ্টা পর বাড়ি ফিরলেন পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী জিবরান
সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কোনঠাসা করার সুযোগ অবশেষে পেয়ে যায় দেশটির সেনাবাহিনী। গত ৯ মে আধাসামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ইমরানের সমর্থকরা সারাদেশে সামরিক স্থাপনায় নজিরবিহীন হামলা চালায়।
পরে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে মুক্ত হন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ এবং সেনা বলয়ের বাইরে জনগণের নেতা হিসেবে অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয় ইমরানের। তবে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানেই উল্টে গেছে দৃশ্যপট।
ইকোনমিস্ট বলছে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেছেন ইমরান খান। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআই’কে কার্যত ভেঙে দিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। তাদের চাপেই এরইমধ্যে দলত্যাগ করেছেন অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা। গ্রেফতার হয়েছে ইমরানের হাজার হাজার সমর্থক।
এরপর থেকেই ‘অনুতপ্ত’ পিটিআই নেতারা ইমরানের কাছ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিতে থাকেন এবং সেনাবাহিনীর প্রতি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দেন। অনেকেই রাজনীতি থেকে চিরতরে বিদায়ের ঘোষণাও দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: যত নিপীড়ন হবে, জনসমর্থন তত বাড়বে: ইমরান
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে তা নিয়েও ধারণা দিয়েছে ইকোনমিস্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে অতীত পদক্ষেপের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে সেনাবাহিনী। ইমরান খানকে জেলে ঢোকানো, তাকে নির্বাসনে পাঠানো বা রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে। কিংবা দলের যতটুকু অবশিষ্ট থাকবে তা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার অনুমতি দেয়া হতে পারে, যদিও এমন সম্ভাবনা খুবই কম।
আবার এমনও হতে পারে পাকিস্তানে আসন্ন নির্বাচনই হতে দেবে না সেনাবাহিনী। গুঞ্জন রয়েছে, সেনা কর্মকর্তারা পাকিস্তানে একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠনের বিষয়টিও যাচাই করে দেখছেন।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইমরানকে রাজনীতি থেকে হটালেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। এমনকি কমবে না পিটিআই চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তাও। সেক্ষেত্রে শাহবাজ শরিফ বা সেনাবাহিনী যাকেই দেশ পরিচালনার জন্য বেছে নেবে, তাকে বিপুল সংখ্যক পিটিআই সমর্থকের বিপক্ষে লড়তে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে ফিরিয়ে আনতে হবে সঠিক পথে।
]]>