<![CDATA[
টাঙ্গাইলের বাসাইলে উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়া সেতুটি ৫ বছরেও নির্মাণ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে পুনরায় সেতু নির্মাণ করে দেয়ার নির্দেশ দেয় প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু তা আর আলোর মুখ দেখেনি। অভিযোগ রয়েছে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে পার পেয়ে গেছেন ওই ঠিকাদার। জেলা প্রশাসন বলছে, কারও গাফিলতি থাকলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার নিরাইল এলাকায় পড়ে রয়েছে উদ্বোধনের আগে হেলে পড়া সেই সেতুটি। দেখে মনে হয় কোনো ধ্বংসাবশেষ।
জানা গেছে, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ১২৮টি সেতু নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি-ফুলবাড়ি সড়কের নিরাইল এলাকায় ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় উদ্বোধনের আগেই সেতুটি হেলে পড়ে। এ সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিন তদন্ত শেষে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়।
এর পরপরই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটি পুনরায় নির্মাণের লক্ষে বিভিন্ন অংশ ভাঙা শুরু করে। এর অংশ হিসাবে সেতুটির উপরের অংশ ভেঙে রড বের করে। কিন্তু এরপর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটি পুনরায় নির্মাণ না করে বিল তুলে নেয়।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এম সাখাওয়াত হোসেন মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিবেদন দেন।
এদিকে দীর্ঘ দিনেও ফুলকি-ফুলবাড়ি সড়কের নিরাইল এলাকায় সেতু নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ১০ গ্রামের মানুষের। একজন মুমূর্ষু রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে ১০ কি.মি. রাস্তা ঘুরে যেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের আগেই দেবে গেল নওগাঁ-নাটোর সড়ক
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতি হবে জেনে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করে দেয়নি।’
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘দুর্নীতির বিষয়ে যাচাইবাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের সুবিধার জন্য সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সেতুটি না থাকায় ১০ গ্রামের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। দ্রুত সময়ে সেতুটি নির্মাণ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
]]>