<![CDATA[
বেলারুশের জেলবন্দি মানবাধিকার কর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কিকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির সরকার।
বেলারুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনাতলি গ্লাজ শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এ ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে নোবেল কমিটি কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রাজনীতিকরণ করেছে। তাদের এমন সিদ্ধান্তে আলফ্রেড নোবেল কবরে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।’
এবার যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি, রুশ মানবাধিকার সংগঠন মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনের মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস (সিজিএস)।
৬০ বছর বয়সী বিয়ালিয়াৎস্কি বেলারুশের একজন খ্যাতনামা মানবাধিকারকর্মী। কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে ২০২১ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, বেলারুশের বর্তমান সরকারের মানবাধিকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করার কারণে বিয়ালিয়াৎস্কিকে কারাবন্দি করা হয়েছে।
বেলারুশীয় সাহিত্যে পণ্ডিত বিয়ালিয়াৎস্কি ১৯৮৪ সালে হোমিয়েল স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর দুই বছর কাজ করেন বেলারুশ সেনাবাহিনীর যানচালক হিসেবে।
আরও পড়ুন: জেল-থেকে-নোবেল-পেলেন-অ্যালেস-বিয়ালিয়াৎস্কি
পরে সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সোভিয়েতবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের মধ্য দিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বেলারুশ।
স্বাধীনতার কয়েক বছর পর বেলারুশে ‘ভিয়াসনা হিউম্যান রাইটস সেন্টার’ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন বিয়ালিয়াৎস্কি। বেলারুশের রাজপথে বিক্ষোভকারীদের ওপর দেশটির একনায়ক আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর বাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) পুরস্কার ঘোষণার সময় বিয়ালিয়াৎস্কি সম্পর্কে নোবেল কমিটি বলেছে, ‘তিনি তার দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিজের পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন।’
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে দুবার গ্রেফতার ও কারাদণ্ড ভোগ করেছেন বিয়ালিয়াৎস্কি। প্রথমবার ২০১১ সালে কর ফাঁকির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিয়ালিয়াৎস্কিকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০১৪ সালে তিনি মুক্তি পান।
এরপর বেলারুশে কারচুপির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের জেরে ২০২০ সালে দ্বিতীয়বার আটক করা হয় তাকে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থেকে যান লুকাশেঙ্কো। এই দফায়ও কর ফাঁকির অভিযোগ এনে সাত বছর কারাদণ্ড দেয়া হয় বিয়ালিয়াৎস্ককে। সেই থেকে কারাগারেই রয়েছেন তিনি।
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ার বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন বলেন, ‘অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি বেলারুশে মানবাধিকারের জন্য তার লড়াইয়ে এক ইঞ্চিও ছাড় দেননি।’
]]>