Skip to content

কাজ না করেই টিআর কাবিখার লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ! | বাংলাদেশ

কাজ না করেই টিআর কাবিখার লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ! | বাংলাদেশ

<![CDATA[

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি ও সাদুল্লাপুর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি টিআর, কাবিখা ও কাবিটার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা যায়, কাজ না করেই প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, আংশিক কাজ করে প্রকল্পের সমুদয় অর্থ উত্তোলন, এমনকি অন্য প্রকল্পের অর্থে বাস্তবায়িত প্রকল্প দেখিয়ে টিআর প্রকল্পের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তবে খাতা কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হলেও এসব প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেন না ওই সব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ভেলাকোপা পূর্ব মধ্যপাড়া মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসাটি এলাকাবাসীর চাঁদার টাকায় নির্মাণকাজ চলছে। মাদ্রাসার ১০ গজ দূরে ভেলাকোপা পূর্ব মধ্যপাড়া জামে মসজিদ। মাদ্রাসাটির সংস্কার ও এ মসজিদের উন্নয়নে গেল ২০২১-২২ অর্থবছরে টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের আওতায় দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে এক লাখ করে দুই লাখ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পের ব্যাপারে কিছুই জানেন না প্রতিষ্ঠান দুটির সংশ্লিষ্টরা।

মাদ্রাসাটির পরিচালক মো. আবদুল ওয়াহেদ ও ভেলাকোপা পূর্ব মধ্যপাড়া মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার মোয়াজ্জিন আফসার আলী জানান, উপজেলা অফিসের এক ব্যক্তি তাকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন মাদ্রাসা উন্নয়নের জন্য। আর মসজিদের ইমাম জানান কোনো টাকাই পাননি তারা।

আরও পড়ুন: বাড়ল টিআর-কাবিখার অর্থ বা খাদ্যশস্য উত্তোলনের সময়

একই প্রকল্পে ওই ইউনিয়নের হরিনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বেঞ্চ সরবারহ বাবদ এক লাখ, হরিনাথপুর কমিউনিটি ক্লিনিক উন্নয়নে এক লাখ উত্তোলন করা হলেও ওই  ক্লিনিকের চিকিৎসক ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানেন না তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে প্রকল্প বা টাকা উত্তোলনের কথা। স্কুলে দেয়া হয়নি কোনো বেঞ্চও।

ওই প্রকল্পে হরিনাথপুরের মতো পার্শ্ববর্তী পবনাপুর ইউনিয়নের বালাবামুনিয়া বেলতুলি জামে মসজিদের অজুখানা সংস্কার, গেট ও বাউন্ডারি নির্মাণে তিন লাখ ৫৮ হাজার ১৪১ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কোনো কাজই হয়নি সেখানে, মসজিদ কমিটি পাননি টাকা। পার্শ্ববর্তী সমিতির হাট দুর্গা মন্দিরের সংস্কার দেখিয়ে ৯৭ হাজার উত্তোলন করা হলেও মন্দির কমিটি পেয়েছেন ১২ হাজার টাকা। মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমাড়গাড়ি পশ্চিমপাড়া বাইতুল মোস্তাকিম জামে মসজিদের সংস্কার বাবদ এক লাখ টাকা উত্তোলন করা হলেও মসজিদ কমিটি পাননি কোনো টাকা।

এমন অবস্থা পলশবাড়ি ও সাদুল্লাপুর দুই উপজেলার অধিকাংশ উন্নয়ন প্রকল্পের টিআর এর পাশাপাশি লুটপাট হয়েছে কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের অর্থ। রাস্তা ঘষামাজা করে উত্তোলন করা হয়েছে বিল। মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ এসব উন্নয়ন বরাদ্দ আত্মসাৎকারীর বিচার চান স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন: বরাদ্দের সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সরেজমিনে তদন্ত প্রতিনিধি দল

জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম গেল ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পলাশবাড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা না থাকায়, একই সঙ্গে দুই উপজেলার দায়িত্ব পালন করেন।

টিআর ও কাবিখার অর্থ লুটপাটের অভিযোগের বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সংবাদ প্রচার হলে দেখা নেয়ার হুমকি দেন।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান বলেন, প্রকল্পের কাজ না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। প্রমাণ পেলে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে এ দুই উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও কাজের বিনিময়ে টাকার (কাবিটা) ১৯৭টি প্রকল্প ও টেস্ট রিলিফের (টিআর) মাধ্যমে ৩৯৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এসব প্রকল্পে ব্যয় করা হয় ৫৭ কোটি ৩১ লাখ ৮ হাজার ৮৭৭ টাকা এবং ৩৭২ টন চাল ও গম।
 

]]>

সূত্র: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *