Skip to content

ঘুরে আসতে পারেন গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত | লাইফস্টাইল

ঘুরে আসতে পারেন গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত | লাইফস্টাইল

<![CDATA[

গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত বর্তমানে ভ্রমণের জন্য একটি জনপ্রিয় জায়গা। যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড় করে। অথচ ২০১৪ সালের আগে এই জায়গার সঙ্গে কেউ পরিচিত ছিল না। সৈকতটি সম্পর্কে ধারণা কম থাকায় আগে এখানে মানুষের সমাগম কম হতো।

সালটা ২০১৪, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কিছু ছাত্র ঘুরাঘুরি করে সেখানকার কিছু ছবি ফেসবুক ও ইউটিউবে আপলোড করেন। এরপরই সৈকতটির ব্যাপারে সবাই জানতে পারেন। বর্তমানে এখানে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়।

গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত। স্থানীয় মানুষের কাছে এই সৈকত মুরাদপুর বিচ নামে পরিচিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালি সমুদ্রসৈকতের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। অনিন্দ্য সুন্দর গুলিয়াখালি সমুদ্রসৈকতকে সাজাতে প্রকৃতি কোনো কার্পণ্য করেনি।

একদিকে দিগন্তজোড়া সাগর জলরাশি আর অন্যদিকে কেওড়া বন এই সমুদ্রসৈকতকে করেছে অনন্য। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল লক্ষ করা যায়, এই বন সমুদ্রের অনেকটা ভেতর পর্যন্ত চলে গেছে। এখানে পাওয়া যাবে সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মতো পরিবেশ।

গুলিয়াখালি সৈকতকে ভিন্নতা দিয়েছে সবুজ গালিচার বিস্তৃত ঘাস। সাগরের পাশে সবুজ ঘাসের উন্মুক্ত প্রান্তর নিশ্চিতভাবেই আপনার চোখ জুড়াবে। বিচের পাশে সবুজ ঘাসের এই মাঠে প্রাকৃতিকভাবেই জেগে উঠেছে আঁকাবাঁকা নালা। এসব নালায় জোয়ারের সময় পানি ভরে উঠে। চারপাশে সবুজ ঘাস আর তারই মধ্যে ছোট ছোট নালায় পানি পূর্ণ এই দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। পুরো সৈকতজুড়ে সবুজ গালিচার বিস্তীর্ণ ঘাস। দেখতে দারুণ লাগবে আপনার। আর এই সবুজের মাঝ দিয়ে এঁকে বেঁকে গেছে সরু নালা। ব্যাপারটা অনেকটা ছোট ছোট দ্বীপ এর মতো।

অল্প পরিচিত এই সৈকতে মানুষজনের আনাগোনা কম বলে আপনি পাবেন নিরিবিলি পরিবেশ। সাগরের এত ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এই নিরবিলি পরিবেশের গুলিয়াখালি সমুদ্রসৈকত আপনার কাছে ধরা দিবে ভিন্ন ভাবেই। চাইলে জেলেদের বোটে সমুদ্রে ঘুরে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে বোট ঠিক করতে দরদাম করে করে নিতে হবে।

অনেক সুন্দর মাঠ আছে, ফুটবল নিলে টার্ফ এর অনুভূতি পাবেন। জেলেদের বোটে করে সমুদ্রেও ঘুরতে পারবেন, দুই হাজার টাকাতেই ঘুরে আসা যাবে সমুদ্রে।

গুলিয়াখালী যাওয়ার উপায়

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে করেই যেতে পারবেন সীতাকুণ্ডে। এসি ও নন এসি এসব বাসের ভাড়া ৪২০-১০০০ টাকা। প্রয়োজন হলে বাসের সুপারভাইজারকে আগেই বলে রাখবেন সীতাকুণ্ড নামিয়ে দিতে।

আরও পড়ুন: সৌন্দর্যে ভরপুর হিমছড়ি-ইকোপার্ক

ঢাকা থেকে মেইল ট্রেনে করে জনপ্রতি ১২০ টাকা ভাড়া দিয়ে সীতাকুণ্ডে আসতে পারেন। ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে করে ফেনী যেতে পারবেন, শ্রেণিভেদে ভাড়া ২৬৫-৮০০ টাকা। ফেনী থেকে লোকাল বাসে করে সীতাকুণ্ডে যেতে পারেন। ফেনী থেকে লোকাল বাসে সীতাকুণ্ড যেতে ৫০-৭০ টাকা ভাড়া লাগবে।

চট্রগ্রাম থেকে যারা আসবেন তারা প্রথমে অলংকার মোড়, এঁকে খান মোড়, কদমতলী থেকে সীতাকুণ্ড যাবার বাস ও ট্যাক্সি পাওয়া যায়। পছন্দমতো জায়গা থেকে চলে আসতে পারবেন সীতাকুণ্ড বাজারে।

সীতাকুণ্ডের বাসস্ট্যান্ড ব্রিজের নিচ থেকে সরাসরি সিএনজি/অটো নিয়ে গুলিয়াখালি বিচের বাঁধ পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। রিজার্ভ ভাড়া নেবে ১৫০-২০০ টাকা। এক্ষেত্রে দরদাম করে নিবেন। সীতাকুণ্ড ফিরে আসার জন্যে আগে থেকেই সিএনজি অটোচালকের নম্বর নিয়ে রাখতে পারেন। অথবা যাওয়া আসাসহ রিজার্ভ করে নিতে পারেন। সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফিরে আসার সময় সিএনজি/অটো পাওয়া যায় না।

কোথায় থাকবেন

গুলিয়াখালি সমুদ্রসৈকতে থাকার কোনো জায়গা নেই। তবে আপনি চাইলে সীতাকুণ্ড বাজারের স্থানীয় হোটেলে থাকতে পারবেন। এসব হোটেলে ৩০০-৬০০ ও ৬০০-১৬০০ টাকার রুম ভাড়া পাবেন।

কোথায় খাবেন

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে খাবার কোনো ব্যবস্থা নেই। হালকা খাবারের জন্য ছোট ১টি দোকান রয়েছে মাত্র। তাই আসার পথে সীতাকুণ্ড বাজার থেকে প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে নিন।

এ ছাড়া আপনি যদি ভালো ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকেন তাহলে গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতের আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করে আসতে পারেন। দর্শনীয় স্থান গুলো হলো— বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক, চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়, ঝরঝরি ঝরনা, কমলদহ ঝরনা, কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট, মহামায়া লেক, খৈয়াছড়া ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝনা, সহস্রধারা ঝরনা।

গুলিয়াখালী ভ্রমণ টিপস

এখানে রাতে না থাকাই ভালো। টুরিস্ট পুলিশ না থাকায় রাতে সৈকতটি নিরাপদ নয়। সাঁতার না জানলে বেশি দূর কখনো যাবেন না। ভ্রমণস্থানকে ময়লা ফেলে নোংরা করবেন না। জোয়ার-ভাটার সময় জেনে নিন। জোয়ারের সময় হলে বিচের কাছে না থাকাই ভালো। পানির ঢেউ যখন বাড়বে বিচ থেকে চলে আসবেন। আর জোয়ারের সময় পানি উঠে নালাগুলো পূর্ণ হয়ে যায়। তখন পারাপার হতে সমস্যা হতে পারে। আর যেহেতু এটা পর্যটক বান্ধব বীচ নয়, তাই সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

লেখা- মাজহারুল ইসলাম শামীম, শিক্ষার্থী, ফেনী সরকারি কলেজ।

]]>

সূত্র: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *